নিজস্ব প্রতিবেদক: ২০১৮ সালের বিতর্কিত জাতীয় নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে এসব কর্মকর্তাদের মধ্যে যাদের চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে, তাদেরকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
পুলিশের দুটি সূত্র থেকে জানা গেছে, এরই মধ্যে ৪৫ সাবেক জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) এবং ডিসিকে অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) করা হয়েছে। পরবর্তী ধাপে আরও কয়েকজন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হতে পারে।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গত শুক্রবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে জানান, \২০১৮ সালের রাতের ভোটের নির্বাচনে যেসব পুলিশ সুপার ৬৪ জেলার দায়িত্বে ছিলেন, তাদের ওএসডি অথবা বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানো হবে।\
এছাড়াও, সরকার ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ কর্মকর্তাদের তালিকা প্রস্তুত করেছে। এই তালিকার মধ্যে রয়েছে, ঢাকা জেলায় শাহ মিজান শাফিউর রহমান, গাজীপুরে শামসুন্নাহার, নারায়ণগঞ্জে হারুন অর রশীদ, নরসিংদীতে মিরাজ উদ্দিন আহম্মেদ, মানিকগঞ্জে রিফাত রহমান শামীম, ফরিদপুরে জাকির হোসেন খান, শরীয়তপুরে আব্দুল মোমেন, মাদারীপুরে সুব্রত কুমার হালদার, গোপালগঞ্জে সাইদুর রহমান খান, রাজবাড়ীতে আসমা সিদ্দিকা মিলি, কিশোরগঞ্জে মাশরুকুর রহমান খালেদ, টাঙ্গাইলে সঞ্জিত কুমার রায়, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আনোয়ার হোসেন খান, কুমিল্লায় সৈয়দ নুরুল ইসলাম, চাঁদপুরে জিহাদুল কবির, লক্ষ্মীপুরে আ স ম মাহতাব উদ্দিন, ফেনীতে এস এম জাহাঙ্গীর আলম সরকার, নোয়াখালীতে ইলিয়াস শরিফ, চট্টগ্রামে নুরে আলম মিনা, কক্সবাজারে এ বি এম মাসুদ হোসেন, বান্দরবানে মোহাম্মদ জাকির হোসেন, রাঙামাটিতে আলমগীর কবির, খাগড়াছড়িতে আহমার উজ্জামান, সিলেটে মো. মনিরুজ্জামান, মৌলভীবাজারে মোহাম্মদ শাহজালাল, হবিগঞ্জে মোহাম্মদ উল্লাহ, ময়মনসিংহে শাহ আবিদ হোসেন, নেত্রকোনায় জয়দেব চৌধুরী, শেরপুরে কাজী আশরাফুল আজীম, জামালপুরে দেলোয়ার হোসেন, পঞ্চগড়ে গিয়াস উদ্দিন আহমদ, লালমনিরহাটে এস এম রাশিদুল হক, গাইবান্ধায় আবদুল মান্নান মিয়া, ঠাকুরগাঁওয়ে মো. মনিরুজ্জামান, কুড়িগ্রামে মেহেদুল করিম, দিনাজপুরে সৈয়দ আবু সায়েম, নীলফামারীতে মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন, রংপুরে মিজানুর রহমান, নওগাঁয় ইকবাল হোসেন, জয়পুরহাটে রশীদুল হাসান, বগুড়ায় আলী আশরাফ ভুঁইয়া, রাজশাহীতে মো. শহিদুল্লাহ, নাটোরে সাইফুল্লাহ আল মামুন, পাবনায় শেখ রফিকুল ইসলাম, সিরাজগঞ্জে টুটুল চক্রবর্তী, চাঁপাইনবাবগঞ্জে এ টি এম মোজাহিদুল ইসলাম, সাতক্ষীরায় সাজ্জাদুর রহমান, যশোরে মঈনুল হক, বাগেরহাটে পংকজ চন্দ্র রায়, খুলনায় এস এম শফিউল্লাহ, ঝিনাইদহে মো. হাসানুজ্জামান, চুয়াডাঙ্গায় মাহাবুবুর রহমান, কুষ্টিয়ায় এস এম তানবীর আরাফাত, মেহেরপুরে মোহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান, নড়াইলে জসিম উদ্দিন, মাগুরায় খান মোহাম্মদ রেজওয়ান, বরিশালে সাইফুল ইসলাম, পিরোজপুরে মোহাম্মদ সালাম কবির, ভোলায় মোহাম্মদ মোকতার হোসেন, ঝালকাঠিতে জোবায়দুর রহমান, পটুয়াখালীতে মোহাম্মদ মঈনুল হাসান ও বরগুনায় মারুফ হোসেন।
এদিকে, গত বুধবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে এক প্রজ্ঞাপন জারি করে ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ৩৩ কর্মকর্তাকে ওএসডি করা হয়েছে। এর আগে ১২ কর্মকর্তাকে একই কারণে ওএসডি করা হয়েছিল।
এই কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়টি এখন প্রক্রিয়াধীন এবং পুলিশ ও প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র আলোচনা চলছে।