Logo

বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর মূল লক্ষ্য ইন্টারনেট শাটডাউন চিরতরে বন্ধ: প্রেস সচিব

বাংলাদেশে ইন্টারনেট শাটডাউন চিরতরে বন্ধ করার লক্ষ্যেই ইলন মাস্কের স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশে ইন্টারনেট শাটডাউন চিরতরে বন্ধ করার লক্ষ্যেই ইলন মাস্কের স্টারলিংক স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ইলন মাস্কের মধ্যে এ বিষয়ে ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকের বিষয়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

স্টারলিংকের মাধ্যমে ইন্টারনেট শাটডাউন প্রতিরোধ : প্রেস সচিব শফিকুল আলম তার এক ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, ‘বাংলাদেশে স্টারলিংক চালুর মূল কারণ হলো অনলাইন শাটডাউন চিরতরে বন্ধ করা। শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে একাধিকবার ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়েছে, যা সাধারণত স্বৈরশাসকরা বিক্ষোভ ও বিরোধী আন্দোলন দমন করতে ব্যবহার করে। কিন্তু এই ইন্টারনেট বন্ধের ফলে হাজারো ফ্রিল্যান্সার ও অনলাইন ভিত্তিক কর্মসংস্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অনেকে তাদের গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি হারিয়েছেন, কেউ কেউ চাকরি হারিয়ে স্থায়ী আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘স্টারলিংক চালু হলে ভবিষ্যতে কোনো সরকারই ইন্টারনেট পুরোপুরি বন্ধ করতে পারবে না। বিশেষ করে বিপিও (বিজনেস প্রসেস আউটসোর্সিং) প্রতিষ্ঠান, কল সেন্টার এবং ফ্রিল্যান্সাররা আর ইন্টারনেট বন্ধের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না। এটি ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’

ইলন মাস্ক ও মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠক : বাংলাদেশে স্টারলিংক সেবা চালুর বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ইলন মাস্কের মধ্যে ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এই বৈঠকে তারা স্টারলিংকের সম্ভাবনা, ভবিষ্যৎ সহযোগিতা এবং প্রযুক্তিগত দিক নিয়ে আলোচনা করেন।

প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ‘প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্টারলিংকের মাধ্যমে বাংলাদেশে নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। ইলন মাস্ক বাংলাদেশের ডিজিটাল উন্নয়ন ও ফ্রিল্যান্সারদের জন্য স্টারলিংকের ভূমিকা নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। দুই পক্ষ ভবিষ্যতে স্টারলিংক বাস্তবায়নের জন্য সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।’

বাংলাদেশে স্টারলিংক কীভাবে কাজ করবে? : স্টারলিংক হলো স্পেসএক্সের পরিচালিত একটি স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট সেবা, যা পৃথিবীর যে কোনো স্থানে দ্রুতগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করতে সক্ষম। প্রচলিত মোবাইল ও ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্কের ওপর নির্ভর না করে এটি সরাসরি স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ প্রদান করবে।

বাংলাদেশে স্টারলিংক চালু হলে গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলেও দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবা পাওয়া যাবে। বিশেষ করে, কোনো সরকার যদি রাজনৈতিক কারণে ইন্টারনেট বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে স্টারলিংক ব্যবহারকারীরা বিকল্প সংযোগের সুবিধা পাবেন।

সরকারের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা : স্টারলিংকের আগমনের ফলে বাংলাদেশের ইন্টারনেট নীতিতে কী ধরনের পরিবর্তন আসবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে বিশ্লেষকদের মতে, এটি দেশের ডিজিটাল অর্থনীতিকে আরও সমৃদ্ধ করবে এবং ইন্টারনেটের স্বাধীনতাকে নিশ্চিত করবে।

সরকারের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। তবে স্টারলিংক বাংলাদেশে আনতে আনুষ্ঠানিক অনুমোদন ও নীতিগত সিদ্ধান্ত প্রয়োজন হবে।