Logo

৫ গোলে জিতে প্রিমিয়ার লিগ চ্যাম্পিয়ন হয়ে লিভারপুল এখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পাশে

রেকর্ড ২০ বার ঘরোয়া লীগের রেকর্ডে এখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পাশেই থাকবে লিভারপুলের নাম।

গোলের পর সালাহের (মাঝে) সঙ্গে উচ্ছ্বাস সতীর্থদের। ছবি: রয়টার্স।

স্পোর্টস ডেস্ক

ঢাকা: মাত্র এক পয়েন্ট হলেই শিরোপা নিশ্চিত-এমন সমীকরণ নিয়েই মাঠে নেমেছিল লিভারপুল। প্রতিপক্ষ টটেনহ্যাম হটস্প্যারকে ৫-১ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে প্রিমিয়ার লীগ চ্যাম্পিয়নের মুকুট জিতলো আর্নে স্লটের দল। এর ফলে তারা  ছুঁয়ে ফেললো সাম্প্রতিক সময়ে খারাপ সময় কাটানো ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডকে। রেকর্ড ২০ বার ঘরোয়া লীগের রেকর্ডে এখন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের পাশেই থাকবে লিভারপুলের নাম।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সুপার সানডে ম্যাচডেতে ঘরের মাঠ অ্যানফিল্ডে লিভারপুলকে এ দিন ম্যাচের শুরুতেই অবশ্য চমকে দেয় টটেনহ্যাম।

মাত্র ১২ মিনিটে এগিয়ে যায় তারা। কর্নার থেকে গোল করেন লিভারপুলেরই প্রাক্তন ফুটবলার ডমিনিক সোলাঙ্কে।

পাঁচ মিনিট পরেই সমতা ফেরান লুইস দিয়াজ়।

২৩ মিনিটে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন আলেক্সিস ম্যাক অ্যালিস্টার। টটেনহ্যাম ক্লিয়ার করতে পারেননি। জোরালো শটে বল জালে জড়ান আর্জেন্টিনীয় ফুটবলার।

লিভারপুলের তৃতীয় গোল কোডি গাকপোর।

লিভারপুল ট্রফি জিতবে আর মহম্মদ সালাহ গোল করবেন না তা কি হয়!

৬৩ মিনিটেই সমর্থকদের আশা পূরণ করেন সালাহ। বাঁ পায়ের শটে গোল করার পরেই চলে যান গ্যালারির দিকে। এক সমর্থকের থেকে ফোন নিয়ে নিজস্বী তোলেন গ্যালারির সঙ্গে।

পঞ্চম গোল আত্মঘাতী। দিয়োগো জোটার শট আলেকজ়‌ান্ডার আর্নল্ডের কাছে যায়। তাঁর ক্রস ছিল সালাহের উদ্দেশে। ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই বল ঢুকিয়ে দেন ডেস্টিনি উডোগি।

৩০ বছরের খরা কাটিয়ে ২০১৯-২০ সালে প্রিমিয়ার লিগ জিতেছিল লিভারপুল। করোনার কারণে সেই সময় প্রায় কোনও সমর্থকই মাঠে এসে ট্রফি জয় উপভোগ করতে পারেননি। কিন্তু এ বারের ইপিএল-জয়ের আনন্দই আলাদা।

আগের দিন আর্সেনাল ড্র করার পরেই উৎসব শুরু হয়েছিল। তা পূর্ণতা পেল রবিবার।

রবিবার (২৭ এপ্রিল) সকাল থেকে লিভারপুলের স্টেডিয়াম অ্যানফিল্ডের চারপাশে তৈরি হয়েছিল উৎসবের পরিবেশ। কাতারে কাতারে সমর্থক হাজির হয়েছিলেন। আগে থেকেই এলাকার বিভিন্ন দেওয়ালে ‘২০’ লেখা গ্রাফিতি আঁকা শুরু হয়ে গিয়েছিল।

ম্যাচ শুরুর দু’ঘণ্টা আগে থেকে অ্যানফিল্ড চত্বর অবরুদ্ধ হয়ে যায়। লিভারপুলের কোচ আর্নে স্লটকে স্বাগত জানাতে দাঁড়িয়েছিলেন হাজার হাজার সমর্থক। আতসবাজি জ্বালানো শুরু হয়ে গিয়েছিল। সমর্থকেরা প্রতীকী ট্রফি নিয়ে উৎসব করতে শুরু করেছিলেন। আতসবাজির জেরে আকাশ ধোঁয়ায় ঢেকে যায়।

১৯৮৯-৯০ সালে ইপিএল জেতার পর থেকে টানা ৩০ বছর এই ট্রফি জেতেনি লিভারপুল। ফলে এমন অনেক সমর্থক রয়েছেন, যাঁরা প্রিয় ক্লাবকে ঘরোয়া লিগ জিততেই দেখেননি। সেই তরুণ প্রজন্মের সমর্থকদের উচ্ছ্বাস ছিল সবচেয়ে বেশি। যেমন আবিগেল এবং লিউইস। দু’জনেই গত বার করোনার কারণে মাঠে এসে ট্রফি জয় দেখতে পারেননি। এ বার অনেক আগে থেকেই হাজির হয়ে গিয়েছেন স্টেডিয়ামে।

আবিগেল বললেন, “আগের বার লকডাউনের কারণে কোনও উৎসবই করতে পারিনি। এ বার সেই আক্ষেপ মিটিয়ে নেব।”

লিভারপুলের প্রতিটি বার এবং পাবে ছিল উপচে পড়া ভিড়। আগে থেকেই সেগুলি তৈরি ছিল। প্রতিটি পাবেই ছিল উৎসবের পরিবেশ। বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। লিভারপুলের খেলা দেখতে উত্তর আয়ারল্যান্ড থেকে অনেক সমর্থক হাজির হয়েছিলেন। বোট, বিমান, গাড়ি, ট্রেন— লিভারপুলে এ দিন সব ধরনের যানবাহনেই দেখা গিয়েছে সমর্থকদের ভিড়।

লিভারপুলের বাস স্টেডিয়ামে ঢোকার মুখে লাল ধোঁয়ায় ঢেকে যায় আকাশ। ফুটবলারেরা বাসের ভিতর থেকেই সমর্থকদের উদ্দেশে হাত নাড়াতে থাকেন।

অনেকেই লিভারপুলের এই সাফল্যের পিছনে প্রাক্তন কোচ জুরগেন ক্লপের হাত দেখছেন। তাঁর অধীনেই লিভারপুলের মানসিকতা বদলে গিয়েছিল ২০১৫ সাল থেকে। এ বার লিভারপুল ৮২ পয়েন্টে লিগ জিতেছে। কিন্তু অতীতে ৯২, এমনকী ৯৭ পয়েন্ট পেয়েও শেষ করতে হয়েছে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির পিছনে। ক্লপ যে ভিত গড়ে দিয়েছিলেন, তার উপর দাঁড়িয়েই সাফল্য পেয়েছেন স্লট।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0