Logo

‘নন্দিত লোকটি নিন্দিত হয়ে বিদায় নিলে বিএনপি কষ্ট পাবে’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, দেশে বর্তমানে অস্থিরতা চলছে। এই অস্থিরতার কারণে নন্দিত লোকটি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) নিন্দিত হয়ে বিদায় নিলে আমরা (বিএনপি) মনে কষ্ট পাবো।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেছেন, দেশে বর্তমানে অস্থিরতা চলছে। এই অস্থিরতার কারণে নন্দিত লোকটি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) নিন্দিত হয়ে বিদায় নিলে আমরা (বিএনপি) মনে কষ্ট পাবো।

শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ‘অপরাজেয় বাংলাদেশ’ আয়োজিত ‘জাতীয় নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াও দেশবাসী’ শীর্ষক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফারুক বলেন, দেশে একটি অস্থিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই অস্থিরতার মূল হোতা কারা? কারা এই অস্থিরতা সৃষ্টি করছেন? কারা নির্বাচন বিলম্বিত করতে চাচ্ছেন? এই বিষয়গুলো আমরা জানতে চেয়েছি। আপনি নাকি বলেছেন, জুলাইতে নির্বাচন হবে। জুলাই হবে না ডিসেম্বরে হবে-রোডম্যাপটা দিলেই তো আমরা যারা আন্দোলনে ছিলাম তারা আপনার সঙ্গে বসতে পারতাম। কিন্তু এখন পর্যন্ত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করলেন না।

তিনি বলেন, আমরা মনে করি, এই অস্থিরতার কারণ যদি আপনার সৃষ্টি হয়ে থাকে, তাহলে বিএনপি এই অস্থিরতা কোনোদিন গ্রহণ করবে না। এই দোষ আমাদের ঘাড়ে দিতে পারবেন না। কারণ আমরা তো আপনার কাছে নির্বাচন চাই। সংস্কার করুন, কিন্তু এমন সংস্কার করবেন না, যাতে করে করিডোর হবে, চট্টগ্রামের বন্দর অন্যের হাতে চলে যাবে, ষড়যন্ত্রকারীরা নির্বাচন বিলম্বিত করে আপনাকে অস্থির করে তুলবে। তাই অস্থিরতা কাটাতে হলে আপনাকে আজ, কাল বা পরশুর মধ্যে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আপনি যদি এই অস্থিরতার কারণে এই নন্দিত লোকটি নিন্দিত হয়ে বিদায় নেন, তাহলে আমরা মনে কষ্ট পাবো। ইতিহাসে আপনার নামটি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকুক। আপনি সাহাবুদ্দিনের মতো একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দিন। দিনের ভোট দিনে হোক। 

জয়নুল আবেদীন ফারুক বলেন, গত পরশু দেখলাম, শ-দুয়েক লোক নিয়ে এনসিপি নির্বাচন কমিশনের পদত্যাগ এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। আবার গত কয়েকদিন ধরে ঢাকা দক্ষিণের জনগণ তাদের প্রিয় নেতা ইশরাককে আদালতের রায় অনুসারে শপথ বাক্য পাঠ করানোর জন্য ডিএসসিসি ভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। তার কয়েকদিন আগেই সবচেয়ে পবিত্র স্থান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাম্য নৃশংসভাবে খুন হয়েছেন।

তিনি বলেন, ছাত্রদল প্রতিবাদ করেই যাচ্ছে। প্রতিনিয়ত এই প্রেসক্লাবের সামনে হাসিনা ফ্যাসিস্টের বিরুদ্ধে অনেক ছোটখাটো রাজনৈতিক দল ও পেশাজীবী সংগঠন ইউনূস সরকারের কাছে তাদের দাবিগুলো পেশ করছে। কিন্তু সমসাময়িক রাজনীতিতে গতকাল আমাকে বিস্মিত করেছে, আপ্লুত করেছে। একজন স্বাধীনতা যোদ্ধা হিসেবে গতকাল আমি সবচেয়ে বেশি মনে কষ্ট পেয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এই কথা শুনে আমার মনটা খুব খারাপ হয়েছে। আপনাকে (ইউনূস) কেন বসিয়েছিলাম? নয় মাস আপনি কি সেই পথে এগোতে পেরেছেন? পারেননি। না পারার কারণ আমরা জানতে চাই।

জয়নুল আবেদীন ফারুক বলেন, গতকাল আমাদের দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন কী দুঃখে তিন উপদেষ্টার পদত্যাগ চেয়েছেন? আমরা তো চাইনি আপনাদের পদত্যাগ। আমরা তো আপনাদের বসিয়েছিলাম, বাংলাদেশের মানুষ যে জন্য আন্দোলন করেছে-একটি নির্বাচনের জন্য।

তিনি বলেন, নয় মাস অতিবাহিত হলো, কেন এখনো নির্বাচনের রোডম্যাপ দেওয়া হচ্ছে না? আজকে কাদের পরামর্শে, কাদের কথায় এখনো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়নি? তাই আমাদের দল বলেছে, আপনাদের তিনজনের আগে পদত্যাগ করতে হবে। 

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন অপরাজেয় বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এম এ আজাদ চয়ন এবং সঞ্চালনা করেন সাধারণ সম্পাদক ইসমাঈল হোসেন সিরাজী। 

এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সফু ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0