বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: দীর্ঘ চার দশকের শান্তিরক্ষার ইতিহাসে বাংলাদেশের শান্তিরক্ষীরা বিশ্বের ৪৩টি দেশ ও স্থানে, ৬৩টি জাতিসংঘ মিশন সফলতার সাথে সম্পন্ন করেছে। বর্তমানে ১০টি দেশে আমাদের ৫,৮১৮ জন শান্তিরক্ষী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ও কার্যক্রমে নিয়োজিত আছে যার মধ্যে রয়েছে ৪৪৪ জন নারী শান্তিরক্ষী। শুরু থেকে এ পর্যন্ত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের সর্বমোট ১৬৮ জন শান্তিরক্ষী শহীদ হয়েছেন। এই বছর ২ জন আহত শান্তিরক্ষীকে সম্মাননা প্রদান করা হবে।
আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস আজ বৃহস্পতিবার (২৯ মে)। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও দিবসটি পালন করা হচ্ছে। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী বিশ্বের সব দেশের শান্তিরক্ষীদের অসামান্য অবদানকে এই দিনে গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয়।
শান্তি ও সংঘর্ষ বিশ্লেষকরা মনে করেন, বাংলাদেশ শান্তি রক্ষায় যে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে তার উচিত এখন একটি সমন্বিত শান্তিরক্ষা কৌশল প্রণয়ন করা এবং জাতিসংঘকে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব করা যে, কোনও সংকট বা সংঘাতপূর্ণ এলাকায় শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের প্রতিটি ধাপে-সংঘর্ষ থেকে স্থিতিশীলতা, স্থিতিশীলতা থেকে শান্তি এবং শান্তি থেকে সমৃদ্ধির পথে-টেকসই উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
দিবসটি উদযাপনে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয়ভাবে নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে উল্লেখ করে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সকালে শান্তিরক্ষীদের স্মরণের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) প্রধান অতিথি হিসেবে “শান্তিরক্ষী দৌড়/র্যালি-২০২৫” অনুষ্ঠান সকালে উদ্বোধন করবেন। পরে বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আহত শান্তিরক্ষীদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হবে। এ অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। এসময় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ওপর বিশেষ উপস্থাপনা থাকবে।
প্রধান উপদেষ্টার বাণী
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস ‘আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী দিবস’ উপলক্ষ্যে বাণী দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গত জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থান এবং পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের শান্তি ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সশস্ত্র বাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়িয়ে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অভিজ্ঞ সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের সদস্যরা সংঘাত প্রতিরোধ, বেসামরিক নাগরিকদের সুরক্ষা, মানবাধিকার নিশ্চিতকরণ ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করবেন বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। বাংলাদেশ শান্তির সংস্কৃতি, সহনশীলতা এবং মানবিকতার চর্চায় বিশ্বাসী। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আমাদের অব্যাহত অংশগ্রহণ বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠায় আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকারের প্রতীক। আমি আশা করি, ভবিষ্যতেও আমাদের শান্তিরক্ষীরা তাদের পেশাগত দক্ষতা, সাহসিকতা, অনন্য সাধারণ মানবীয় গুণাবলি, আত্মত্যাগ ও নিষ্ঠার মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি শান্তি প্রতিষ্ঠাকারী দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে সুপরিচিত করবেন।’
বাংলাফ্লো/এসকে
Comments 0