বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: আবারও শাপলা প্রতীক নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে দেখা করেছে নাগরিক ঐক্য। নতুন প্রতীক তালিকাভুক্ত হলে আগে আবেদন করায় শাপলা প্রতীক অবশ্যই নাগরিক ঐক্য পাবে বলে দাবি করেছে দলটি।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল সিইসি এ, এম, এম, নাসির উদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
সিইসির সঙ্গে নাগরিক ঐক্যের প্রতিনিধি দলের বৈঠকের সময় নির্বাচন কমিশন সচিব উপস্থিত ছিলেন। নাগরিক ঐক্যের প্রতিনিধি দলে ছিলেন নারী ও শিশু বিষয়ক কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক ফেরদৌসী আক্তার ও দপ্তর সম্পাদক মহিদুজ্জামান মহিদ।
প্রতিনিধি দল জানায়, ‘নতুন বাংলাদেশে’ আগের মতো সরকারি দল বলে কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন এমন বিষয় এখন নেই। প্রতীক বরাদ্দে বঞ্চনা যেন না হয়। দলীয় প্রতীক হিসেবে শাপলাকে নাগরিক ঐক্যের জন্য সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়েছে। পরবর্তীতে জাতীয় নাগরিক কমিটি নতুন দল হিসেবে নিবন্ধন আবেদনের সময় প্রতীকটি চাওয়ায় নানা আলোচনার মধ্যে উদ্বেগ জানিয়েছে বলে জানায় দলটি।
দলটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ার জানান, আমাদের একটা কনসার্নের জায়গা ছিল, প্রতীক পরিবর্তনের জন্য আমাদের আবেদন ছিল সেটা নিয়ে কথা বলতে এসেছি। ১৭ জুন আমাদের নাগরিক ঐক্যের দলীয় কেটলি পরিবর্তন করে পছন্দের ক্রমানুসারে শাপলা ও দোয়েল দিয়েছিলাম। এখনও নতুন দলের নিবন্ধন চূড়ান্ত হয়নি। সেই নতুন প্রতীক বিধিমালায় যুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এমন পরিস্থিতিতে নাগরিক ঐক্যের দাবি পর্যালোচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ারের।
তিনি বলেন, কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে এখন পর্যন্ত কে নিবন্ধন পাবে, কে পাবে না-সেটা নির্ধারিত হয়নি। যদি নতুন প্রতীক শাপলা গেজেটভূক্ত হয়, সেখানে আমরা যেহেতু আগে আবেদন করেছি, সেক্ষেত্রে আমাদের বরাদ্দ দেওয়া হবে। আমরা অবশ্যই বঞ্চিত হবো না, সেটা আমরা যেমন প্রত্যাশা করি, তেমনি কমিশনও নিশ্চিত করেছে।
সাংগঠনিক সম্পাদক সাকিব আনোয়ারের বলেন, আমরা যখন নিবন্ধন পাই, তখন আমরা পছন্দ অনুযায়ী প্রতীক পাইনি। এ বিবেচনায় আমরা গত ১৭ জুন প্রতীক পরিবর্তনের জন্য আবেদন করি এবং পছন্দের ক্রম শাপলা ও দোয়েল চাই। এখন নতুন করে ১৪৪টি দলের ১৪৭টি আবেদন এসেছে। এরমধ্যে নিবন্ধন আবেদনের শেষ দিন ২২ জুন একটি দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি ও দলীয় প্রতীক শাপলা চেয়েছে। আমাদের কনসার্নের জায়গা হচ্ছে, গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমনভাবে তথ্য দেখেছি কমিশন তাদের শাপলা প্রতীক বরাদ্দ দিয়ে দিয়েছে। কনসার্নটা আমরা সিইসিকে জানাতে এসেছি। নিবন্ধনের কাজ শেষ না করে এ ধরনের বিষয় আসাটা যৌক্তিক নয়।
তিনি জানান, নিবন্ধনের প্রক্রিয়াটা জটিল ও নিবন্ধনশর্ত পূরণ যাচাইয়ের আগে বিধিমালায় সবমিলিয়ে শতাধিক প্রতীক যুক্ত হচ্ছে। কমিশন জানিয়েছে, বিদ্যমান ৬৯ থেকে এ সংখ্যা আরও বাড়বে।
নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, সিইসি ও সচিবকে আমরা জানিয়েছি, নতুন প্রতীক শাপলা গেজেটভুক্ত হয় কিংবা দোয়েল যুক্ত হয়; সেক্ষেত্রে ১৭ জুন যেহেতু আমরা আবেদন করেছি এবং পরবর্তী সময়ে একই মার্কা নিয়ে আরেকটা আবেদন হলেও শাপলা নাগরিক ঐক্যেরই প্রাপ্য।
কমিশন কি বলেছেন জানতে চাইলে নাগরিক ঐক্যের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, অবশ্যই, আপনারা আগে আবেদন করেছেন। এখন পর্যন্ত যারা আবেদন করেছে, আমরা চাই দল নিবন্ধন পাক। যে দলের বিষয়ে আলোচনা চলছে, সামনে দিনে তারা রাজনীতিতে, নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। নিবন্ধন পাক সেটা আমরা চাই। নিবন্ধন হয়ে গেছে এমন নয়, রিকোয়ারমেন্ট ফুলফিল করার পরেই সেটা হবে।
সিইসির সঙ্গে বৈঠকে ভোটের প্রস্তুতির বিষয়েও আলোচনা করার কথা জানান নাগরিক ঐক্যের এ প্রতিনিধি। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছি। প্রতীক পরিবর্তনের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগের কথাও জানিয়েছি আমরা। কমিশন ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে কমিশন ভোটের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে- এটাকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। আমরা প্রত্যাশা করি, দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হতে যাচ্ছে, প্রধান উপদেষ্টা যেভাবে বলেছেন, সেভাবে আমরাও চাই, বলেন সাকিব আনোয়ার।
এরআগে, ২০১৮, ২০২৪ সালের ভোটের আগে নাগরিক ঐক্য নিবন্ধন আবেদন করেছিল। তখন নিবন্ধন না পাওয়ায় পছন্দের প্রতীকও পায় যায়নি বরং ওই সময় অন্যদলগুলো নিবন্ধন পেয়ে তাদের পছন্দের প্রতীকও পেয়ে যায়। অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে সেপ্টেম্বরে নিবন্ধন পায় নাগরিক ঐক্য।
বাংলাফ্লো/এসকে
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0