Logo

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার ডাকে সচিবালয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যরা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ডাক আসে বৈঠকের। আপাতত পদযাত্রা কর্মসূচি স্থগিত করে সচিবালয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যরা।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যরা মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২টার মধ্যে দাবি না মানলে যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা ও ঘেরাওয়ের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন। তবে তার আগেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ডাক আসে বৈঠকের। তাই আপাতত পদযাত্রা কর্মসূচি স্থগিত করে সচিবালয়ে যাচ্ছেন আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যরা।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক ফলপ্রসূ হলে কর্মসূচি প্রত্যাহার করবেন তারা। দাবির বিষয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন। আন্দোলনরত বিডিআর সদস্য ফরহাদ হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, জাতীয় জাদুঘরের সামনে মঞ্চ বানিয়ে অবস্থান নিয়েছেন তিন দফা দাবি আদায়ে গত তিনদিন ধরে আন্দোলন করে আসা কয়েক হাজার বিডিআর সদস্য।

দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আজ বিডিআর কল্যাণ পরিষদের ব্যানারে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে পদযাত্রা ও ঘেরাও কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন তারা। তবে তার আগেই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পক্ষ থেকে ডাক আসে বৈঠকের।

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রমনা উপকমিশনার (ডিসি) ইবনে মিজান শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে উপস্থিত হয়ে আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে অংশ নেওয়ার আমন্ত্রণের তথ্য জানান। বলেন, আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যদের মধ্য থেকে ১০ সদস্যের প্রতিনিধি দল পুলিশের গাড়িতে সচিবালয়ে প্রবেশ করবেন।

পরে পুলিশের গাড়িতে বিডিআর কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ফয়জুল আলমের নেতৃত্বে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কার্যালয়ে রওনা হন আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল।

প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন সুবেদার ফকরুদ্দিন, তৌহিদ, হাবিলদার, মনিরুজ্জামান, হাবিলদার মাহবুব, দেলওয়ার, আবু সাঈদ, রেজা মামুন, নাজমুল ও ইসহাক।

বিডিআর সদস্য ফরহাদ হোসেন বলেন, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আহ্বানে আমাদের ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল সচিবালয়ে যাচ্ছে। বৈঠক চলাকালে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে শাহবাগে অবস্থান করব। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা কী আশার বাণী শোনান সেটার অপেক্ষায় আমরা। আপাতত স্থগিত থাকবে পদযাত্রা কর্মসূচি। তারা কি ম্যাসেজ নিয়ে আসে সেটার ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী কর্মসূচি ও করণীয় নির্ধারণ করা হবে।

তিনি বলেন, আমাদের মূল তিনটি দাবি

১. পিলখানাসহ সারা দেশের বিডিআর ইউনিটগুলোতে বিশেষ আদালত এবং মহাপরিচালক ও অধিনায়কের সামারি কোর্টের মাধ্যমে চাকরিচ্যুতও ক্ষতিগ্রস্ত (৭৬ ব্যাচসহ) সব বিডিআর সদস্যদের চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধাসহ পূর্ণ ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করতে হবে।

২. পিলখানা হত্যাকাণ্ডে গঠিত শর্তযুক্ত তদন্ত কমিটিকে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন তদন্ত কমিশনে রূপান্তরের লক্ষ্যে এর সার্বিক পূর্ণ কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত করছে এমন সব বিধিনিষেধ বিশেষ করে প্রজ্ঞাপনে উল্লিখিত ‘ব্যতীত’ শব্দ এবং কার্যপরিধি ২ এর (৬) ধারাটি বাতিল করে কমিশনকে স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং মিথ্যা সাক্ষীর সাক্ষ্যের ভিত্তিতে দণ্ডিত হয়ে বর্তমানে দীর্ঘ প্রায় ১৬ বছর ধরে কারাবন্দি নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে।

৩. ২০০৯ সালে পিলখানায় সৃষ্ট ঘটনার আলোকে যেসব ন্যায়পরায়ণ ও দেশপ্রেমিক সেনা কর্মকর্তাদের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত ও ক্ষতিগ্রস্ত করা হয়েছে, তাদের পুনর্বাসন করতে হবে এবং স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধারণকারী সীমান্তের অতন্দ্র প্রহরী ‘বাংলাদেশ রাইফেলস্’ তথা ‘বিডিআর’ নামটি পুনঃস্থাপন করতে হবে।

ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা গত ৯ মাসে বিভিন্ন দপ্তর, প্রধান উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ বিভিন্ন দপ্তরের সচিবদের স্মারকলিপি দিয়েছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা ও ঘেরাওয়ের আল্টিমেটাম দিয়েছে চাকরিচ্যুত, কারামুক্ত বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। যদি তারা আমাদের দাবি না মেনে নেয় তাহলে রাজপথ ছাড়া বিকল্প কোনো পথ নেই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলমান থাকবে।

বাংলাফ্লো/এসকে

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Related Posts বাংলাদেশ

Leave a Comment

Comments 0