বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: প্রধান উপদেষ্টার ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেছেন, জুলাইযোদ্ধা যারা বিষপান করেছেন বলা হচ্ছে– তারা আদৌ বিষপান করেছেন কিনা, এটি নিয়ে খোঁজ চলছে। সরকারের পক্ষ থেকে এটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে যে, তারা যেটি পান করেছেন, সেটি আসলেই বিষ কিনা।
মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে জুলাইযোদ্ধাদের বিষপান প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
আজাদ মজুমদার বলেন, “আমরা সবাই জানি যে, দীর্ঘদিন ধরে চিকিৎসাধীন থাকলে এক ধরনের হতাশা কাজ করে। সরকারের পক্ষ থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে— তাদেরকে মানসিকভাবে সাপোর্ট দেওয়ার। এরপরও কারও মধ্যে যদি কোনও ধরনের হতাশা থাকে, আমরা মনে করি যে, সরকারের সংশ্লিষ্ট যারা আছেন— তারা এ বিষয়ে আরও যত্নবান হবেন। তাদেরকে যত বেশি সম্ভব মানসিকভাবে সমর্থন জুগিয়ে যাবেন।”
বিষপানের ঘটনা
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে গত রবিবার আহত চারজন জুলাইযোদ্ধা বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জানা যায়। পরবর্তীকালে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাদের আশঙ্কামুক্ত জানান এবং ভর্তি রেখে তাদের পর্যবেক্ষণ করা হয়।
বিষপানকারীরা হলেন- শিমুল, মারুফ, সাগর ও আখতার হোসেন (আবু তাহের)।
জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক আবুল খায়ের বলেন, “জুলাই ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার (সিইও) সঙ্গে চলমান বৈঠকের সময় ওই চারজন দাবি নিয়ে আমার কক্ষে যান। সিইও তাদের অপেক্ষা করতে বললে ক্ষুব্ধ হয়ে সেখানেই বিষপান করেন তারা।”
তিনি আরও বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তাদের কাছে আগে থেকেই বিষ ছিল।”
পরিচালক বলেন, “জুলাই গণ-আন্দোলনে চোখ হারানো আহতরা অভিযোগ করেছেন, দীর্ঘ ৯ মাসেও তাদের উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং প্রতিশ্রুতি দিয়ে নানা বাহানা করা হয়েছে। আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নেওয়ার কথা বললেও তা বাস্তবে ঘটেনি।”
“আমরা তাদের পরিস্থিতি বুঝতে পারছি। তারা বারবার তাদের নিরাপত্তাহীনতার কথা বলছে। তাদের চিকিৎসার কোনো ত্রুটি নেই। তাদের মধ্যে দুইজনকে সিঙ্গাপুর পাঠানো হয়েছিল সরকারের তরফ থেকে। কিন্তু তাদের দৃষ্টি ফেরানো সম্ভব হয়নি। কারণ গুলি তাদের চোখকে এমনভাবে আঘাত করেছে যে তারা আর কখনও দেখতে পারবে না।”
তিনি বলেন, “এই চার যোদ্ধা দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালে আছে। তবে চিকিৎসাসংশ্লিষ্ট কাজের জন্য তাদের হাসপাতালে থাকার কোনো প্রয়োজন এখন আর নেই। কিন্তু তারা তাদের বাড়ি ফিরতে ভয় পাচ্ছেন। এদের মধ্যে চাঁদপুরে একজনের বাড়ি ঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। তাই তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।”
মানসিক স্বাস্থ্যের অবণতির কারণে তারা বিষপান করেছে বলে মনে করেন আবুল খায়ের।
বাংলাফ্লো/এসকে
Comments 0