স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: স্পেনের আন্দালুসিয়ান উপকূল ঘেঁষে গড়ে ওঠা ঐতিহ্যবাহী ক্লাব কাদিজ সিএফ সম্প্রতি নিজেদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ব্যতিক্রমধর্মী পোস্ট করেছে—বাংলাদেশি কোনো ফুটবলারকে দলে নিতে চাইলে, ভক্তরা কাকে পছন্দ করবে? এই প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে ক্লাবটি যেন সুনির্দিষ্টভাবে বাংলাদেশি ফুটবলপ্রেমীদের মনোযোগ টানার চেষ্টা করেছে। সেই সূত্র ধরে ফুটবল মহলে গুঞ্জন—কিউবা মিচেল না হামজা চৌধুরী, কাদের দিকে ঝুঁকছে কাদিজ?
বাংলাদেশি রক্ত বইছে এই দুই ফুটবলারের শিরায়। কিন্তু পথ দু’জনের ভিন্ন। বয়স, অভিজ্ঞতা, খেলার ধরন—সবকিছুতেই তারা আলাদা। তাই কাদিজ কাকে দলে নিতে পারে, তা নির্ধারণের পেছনে জড়িয়ে আছে একাধিক কৌশলগত যুক্তি।
হামজা চৌধুরী: অভিজ্ঞতার প্রতীক, তবে জটিল বাস্তবতা
ইংল্যান্ডের ঘরোয়া ফুটবলে অভিজ্ঞতার ঝুলিতে অনেক কিছুই আছে হামজা চৌধুরীর। লেস্টার সিটির হয়ে প্রিমিয়ার লিগ, ইউরোপা লিগ খেলা এই মিডফিল্ডার বর্তমানে খেলছেন শেফিল্ড ইউনাইটেডে। ডিফেন্সিভ হোল্ডিং মিডফিল্ডার হিসেবে যিনি মাঠের ভারসাম্য ধরে রাখেন, সেই হামজা যদি কাদিজে যোগ দেন, তাহলে নিঃসন্দেহে দল পাবে আন্তর্জাতিক মানের এক মধ্যমাঠ রক্ষাকর্তা।
তবে বাধা আছে বেশ কিছু। প্রথমত, তার বয়স ২৬—ইউরোপের অনেক ক্লাবের নজর থাকে ২০-২২ বছরের বিকাশমান প্রতিভায়। দ্বিতীয়ত, বেতন কাঠামো—হামজার মতো একজন প্রিমিয়ার লিগ অভিজ্ঞতার খেলোয়াড়কে দলে নিতে হলে খরচও হবে সেই মানের। কাদিজ বর্তমানে লা লিগার দ্বিতীয় স্তরে খেলছে, বাজেটও তুলনামূলক সীমিত। ফলে ঝুঁকি নেওয়ার জায়গা কম।
কিউবা মিচেল: সম্ভাবনার প্যাকেজ, লাভের বিনিয়োগ
অন্যদিকে, সান্ডারল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-২১ দলে খেলা কিউবা মিচেল এখনও বয়সে কাঁচা—মাত্র ১৯। তবে ভবিষ্যতের জন্য এক সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ হতে পারেন তিনি। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে যিনি দৌড়, পাস, ড্রিবলিংয়ে বেশ সাবলীল—কাদিজের মতো ক্লাব যেটা চায় সৃজনশীল মিডফিল্ডার, তাদের জন্য কিউবা হতে পারে আদর্শ অপশন।
কেন তাকে নেওয়া হতে পারে?
বয়স কম, ফলে কম খরচে দীর্ঘমেয়াদি ব্যবহারযোগ্য। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হওয়ায় ক্লাব ব্র্যান্ডিংয়ে লাভ। বিকাশযোগ্য খেলোয়াড় হিসেবে ভবিষ্যতে বিক্রি করেও লাভবান হওয়া সম্ভব।
তবে তার ঝুঁকিও আছে। সিনিয়র পর্যায়ে কোনো ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা নেই। খেলার মানের উন্নতির পথে এখনও অনেক দূর যেতে হবে।
কাদিজের পাল্লা কোথায় ভারী?
এই মুহূর্তে ক্লাবটি সরাসরি কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেছে কি না, তা জানা না গেলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার ধরন দেখে মনে হচ্ছে—তারা ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে আছে। সেই হিসেবে কিউবা মিচেলই তুলনামূলক এগিয়ে। তবে যদি কাদিজ দ্রুত সফলতা চায়, ডিফেন্সিভ লাইন মজবুত করতে চায়, এবং বড় নাম দিয়ে মার্কেটিং করতে চায়—তাহলে হামজা চৌধুরী হতে পারেন অব্যর্থ চয়েস।
কাদিজ কাকে নেবে, সেটি এখনও কেবল জল্পনা। তবে হামজা চৌধুরীর অভিজ্ঞতা বনাম কিউবা মিচেলের সম্ভাবনা—এই দুইয়ের মাঝে ক্লাবের লক্ষ্যই বলে দেবে, তারা বর্তমান চায় নাকি ভবিষ্যৎ।
বাংলাদেশি ফুটবলপ্রেমীদের জন্য অবশ্য দুইটাই স্বপ্নের মতো। কিউবা হোক বা হামজা—স্পেনের সবুজ মাঠে লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব, সেটাই তো বড় কথা।
বাংলাফ্লো/এসও
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0