স্পোর্টস ডেস্ক
ঢাকা: ফুটবলে ফ্রি-কিক মানেই উত্তেজনা, আর যখন সেটি নেন লিওনেল মেসি, তখন সেটি হয়ে ওঠে নিখুঁত শিল্প।
গতকাল শুক্রবার মেসি যখন পোর্তোর মিডফিল্ডার জে জে পেদ্রোর ফাউলে পড়ে ফ্রি-কিক পেলেন, ৭২ হাজার আসনের স্টেডিয়ামে উপস্থিত মাত্র ৩১ হাজার দর্শকের চিৎকারই বলে দিচ্ছিল—এটা শুধু প্রত্যাশা নয়, নিশ্চিত বিশ্বাস।
ধারাভাষ্যকার ও সাবেক স্কটিশ ফুটবলার ডন হাচিসনের মন্তব্যই ছিল স্পষ্ট: “আমি গোল বলেই ধরে নিচ্ছি। ”
তিনি ভুলও বলেননি। ক্লদিও রামোসকে পরাস্ত করে বল গিয়ে জড়ায় পোস্টের ডান কোণায়।
এই তো মেসি—যার ডেড বল শটে ভক্তদের যেমন উত্তেজনা, ডিফেন্ডারদের তেমনি আতঙ্ক।
সংখ্যায় মেসির শ্রেষ্ঠত্ব
মোট ফ্রি-কিক গোল (সব প্রতিযোগিতা): ৬৮
পেনাল্টি গোল: ১১২
লিগে ফ্রি কিকের সাফল্য: ৪৩ গোল / ৪৯১ প্রচেষ্টা → সাফল্যের হার: ৮.৮ শতাংশ
(ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে গড় সাফল্যের হার মাত্র ৫.৫ শতাংশ)
পেনাল্টিতে সাফল্যের হার: প্রায় ৮০ শতাংশ
ফ্রি-কিকে মেসির উত্থান
২০০৪ সালে বার্সেলোনার প্রথম দলে নাম লেখালেও, শুরুতে ফ্রি-কিক নিতেন ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি রোনালদিনহো। ২০০৮-০৯ মৌসুমে আতলেতিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে একটি চাতুর্যময় গোলে শুরু মেসির ফ্রি-কিক অধ্যায়। তবে তা ছিল বুদ্ধির ফল, নিখুঁত টেকনিক নয়।
মেসি ধীরে ধীরে নিজেকে গড়ে তুলেছেন এদিক দিয়ে। ২০১৭-১৮ মৌসুম থেকেই শুরু হয় তার ফ্রি কিকের সেরা সময়।
মেসির ট্রেডমার্ক কিকের বৈশিষ্ট্য
পজিশন: সাধারণত বক্সের ঠিক বাইরে, মাঝখানে বা ডানদিকে সামান্য সরে।
টার্গেট: গোলপোস্টের উপরের ডান কোণা। তার ২২ শতাংশ গোল এসেছে এখান থেকে।
ডানদিক থেকে মারলে: বল গোলরক্ষকের দিক থেকে ঘুরে যায়, যা প্রতিহত করা কঠিন।
বামদিক থেকে মারলে: বল গোলরক্ষকের দিকে ঘোরে, তাই সেখানে সফলতা কম—মাত্র ১১টি গোল।
জাদুকরী বাঁ পা
মেসির শরীরের ভঙ্গিমা, তার ডান পা দিয়ে ভর নিয়ে বাঁ পা ঘোরানো শট—সবই যেন এক নিখুঁত স্ক্রিপ্টের অংশ।
পিএসজি ওএমএলএসে পড়তি সময়
পিএসজিতে দুই মৌসুমে লিগে মাত্র ২টি ফ্রি-কিক গোল
এমএলএসে এখন পর্যন্ত মাত্র ১টি করে গোল দুই মৌসুমে
তবুও আধুনিক ফুটবলে সর্বোচ্চ
২০১০-১১ মৌসুম থেকে ইউরোপের শীর্ষ পাঁচ লিগে মেসির ফ্রি-কিক গোল: ৩৯
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ: রোনালদো (১৯)
গত ম্যাচের গোলটি ছিল আরেকটি স্মরণীয় মুহূর্ত, যা মনে করিয়ে দেয় কেন মেসিকে বলা হয় ‘ফ্রি-কিকের রাজপুত্র’।
বাংলাফ্লো/এসও
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0