বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় যাদুঘরে জামালপুর সমিতি, ঢাকার আয়োজনে রবীন্দ্র-নজরুল জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
সোমবার (১৯ মে) সন্ধ্যায় জাতীয় যাদুঘরের প্রধান মিলনায়তনে বিকেল পাঁচটায় এ অনুষ্ঠান শুরু হয়।
এতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষেজীবন ও সাহিত্য নিয়ে আলোচনা করেন গবেষকেরা।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান বলেন, বাংলা সাহিত্যে সেই আদি চর্যাপদ থেকে শুরু করে আজ অবধি কেউ নজরুল ও রবীন্দ্রনাথকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি।
তিনি বলেন, নজরুল ছিলেন সাম্য ও মানবতার কবি, বাংলা সাহিত্যের বিদ্রোহের যুবরাজ এবং রবীন্দ্রনাথ ছিলেন বাংলা ভাষা সাহিত্যের বিশাল পণ্ডিত। নজরুল ও রবীন্দ্রনাথ দুজনেই ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে ভারতবর্ষকে রক্ষা করার জন্য কলম ধরেছেন, আন্দোলন করেছেন এবং কুসংস্কারের বিরুদ্ধে লেখনীর মাধ্যমে প্রতিবাদ করেছেন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের আজকের যা প্রেক্ষাপট, আজকের যা বাস্তবতা সেখানে ধর্মীয় মৌলবাদ, কুসংস্কার, সাম্প্রদায়িকতা সমাজকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখানেই রবীন্দ্র নজরুল দুজনেই আজও প্রাসঙ্গিক। আগামী দিনের একটি গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে নজরুল ও রবীন্দ্রনাথকে ধারণ করার কোন বিকল্প নেই।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সাহিত্য ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক তারিক মনজুর, কাজী নজরুল ইসলামের জীবন ও কাব্য নিয়ে আলোচনা করেন নজরুল ইন্সটিটিউটের সাবেক নির্বাহী পরিচালক মো. জাকির হোসেন, নজরুল গবেষক ও বাচিক শিল্পী টিটু মুন্সী।
মো. জাকির হোসেন বলেন, অন্য কবিদের জীবন ও কাব্য নিয়ে আলাদা আলোচনা করা যায়। নজরুলের ক্ষেত্রে তা বলা যায় না। নজরুলের জীবন আর কবিতায় কোন তফাত নেই। যখন যা নিয়ে কবিতা লিখেছেন তা নিয়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছেন। নজরুল কবি কিন্তু এর চেয়ে বড় ছিল তার কর্মীসত্ত্বা। যদি তিনি শুধু কবিতা লিখতেন, তাহলে তার জীবনটা এত কষ্টের হত না।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জামালপুর সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না।
অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রয়াত বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারের একমাত্র মেয়ে সালিমা তালুকদার, জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতিফরিদুল কবির তালুকদার শামীম ।
তিনি বলেন, নজরুলের বল বীর চির উন্নত মম শির - আমাকে অনুপ্রাণিত ও উদ্বুদ্ধ করে। তার মধ্যে সাম্প্রদায়িক কোন চিন্তা ছিল না। আলোচনায় অংশ নেন গবেষক ইমদাদুল হক চৌধুরী।
এ দিন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আলতাফ মাহমুদ সঙ্গীত বিদ্যানিকেতনের শিল্পীগণ নাচ এবং সমিতির সদস্যগণ গান পরিবেশন করেন।
অনুষ্ঠানে শেষে সভাপতি হাফিজুর রহমান ময়না ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিনের নেতৃত্বে ২০২৫-২০২৬ মেয়াদের জন্য সমিতির নির্বাহী কমিটির পরিচিতি ও শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে জামালপুর জেলা সমিতির সদস্যরা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাফ্লো/এসবি
Comments 0