বাংলাফ্লো প্রতিনিধি
ঢাকা: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে শুল্ক ও কর কর্মকর্তা-কর্মচারীরা রবি ও সোমবার (২৫ ও ২৬ মে) পূর্ণদিবস কর্মবিরতির ঘোষণা দিয়েছেন। এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে চলমান এই আন্দোলনের ফলে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে ঢাকা কাস্টমস হাউজে।
সরেজমিন দেখা গেছে, রবিবার সকাল থেকে ঢাকা কাস্টমস হাউজে কোনও কার্যক্রম পরিচালিত হয়নি। কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অফিসে এলেও কোনও কার্যক্রমে অংশ নেননি।
ঢাকা কাস্টমস হাউজের কর্মকর্তারা জানান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠনের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে চলমান আন্দোলনে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে আমরা পূর্ণ কর্মবিরতি পালন করছি। আমাদের সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। কোনও সেবাতে আমরা অংশগ্রহণ করছি না। যদি আমাদের দাবি আদায়ে কোনও ধরনের সমঝোতা না হয় তবে ঘোষণা অনুযায়ী আগামীকালও কর্মবিরতি চলবে।
ওই আন্দোলন কর্মসূচির ফলে শনিবার (২৪ মে) সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত এনবিআর ভবনসহ দেশের বিভিন্ন কর, শুল্ক ও ভ্যাট কার্যালয়ে কাজ কার্যত বন্ধ ছিল। এনবিআর কর্মকর্তারা নিজ নিজ দফতর ছেড়ে নিচতলায় অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদে অংশ নেন।
কর্মসূচির অংশ হিসেবে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ চার দফা দাবি উত্থাপন করে। সেগুলো হলো— সদ্য জারি করা ‘রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ’ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে; জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অপসারণ করতে হবে; রাজস্ব সংস্কার-সংক্রান্ত পরামর্শক কমিটির সুপারিশ প্রকাশ করতে হবে এবং প্রস্তাবিত খসড়া ও সুপারিশ সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মতামত নিয়ে পুনর্বিন্যাস করতে হবে।
সংগঠনের নেতারা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, দাবি পূরণে সরকারের সুস্পষ্ট ঘোষণার ভিত্তিতে কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হতে পারে। রাজস্ব আহরণ ও অর্থনীতির স্বাভাবিক প্রবাহ বজায় রাখার স্বার্থেই এই দাবি। পূরণ হলে আমরা অতিরিক্ত সময়ে কাজ করে পিছিয়ে পড়া কার্যক্রম শেষ করবো।
গত অক্টোবরে গঠিত পাঁচ সদস্যের রাজস্ব সংস্কার কমিটি জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন দেয়। সেখানে রাজস্ব নীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা আলাদা করার সুপারিশ করা হয়, যার ভিত্তিতে সরকার ১২ মে নতুন অধ্যাদেশ জারি করে। তবে এনবিআর কর্মকর্তারা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত হুমকির মুখে ফেলবে তাদের প্রশাসনিক কাঠামো ও দফতরের অস্তিত্বকে। ফলে আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানী থেকে জেলা পর্যায়ের দফতরগুলোতেও।
গত ২০ মে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে অর্থ উপদেষ্টাসহ সরকারের তিন উপদেষ্টার বৈঠকেও সমাধান না আসার কারণে অচলাবস্থা দীর্ঘায়িত হয়। শুল্ক-কর কর্মকর্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করে অধ্যাদেশ সংশোধনের জন্য আলোচনা করা হবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় আশ্বাস দিয়েছে।
বাংলাফ্লো/আফি
Comments 0