নিজস্ব প্রতিবেদক: মাগুরার ধর্ষণের শিকার আট বছরের শিশুটির শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়েছে। বুধবার সকালে তার দুবার কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট (হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যাওয়া) হয়েছে। শিশুটিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমএইচ) পিআইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছে। শিশুটির চিকিৎসায় যুক্ত এক চিকিৎসক প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চিকিৎসক জানান, শিশুটির অবস্থা অত্যন্ত জটিল। সকাল আটটার দিকে প্রথমবার তার হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়, চিকিৎসার মাধ্যমে তা ফিরে আসে। পরে দ্বিতীয়বারও একই ঘটনা ঘটে। শিশুটির মস্তিষ্ক এখন প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থায় রয়েছে। গ্লাসগো কোমা স্কেল (জিসিএস) ৩-এ নেমে এসেছে, যা মস্তিষ্কের প্রতিক্রিয়াহীন অবস্থা নির্দেশ করে। চিকিৎসকদের মতে, ঘটনার সময় শিশুটিকে ফাঁস দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়, যার ফলে তার মস্তিষ্কে দীর্ঘ সময় অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। এ কারণেই তার মস্তিষ্কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
১ মার্চ মাগুরায় বোনের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া শিশুটিকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন তার মা। এ মামলায় শিশুটির ভগ্নিপতি, বোনের শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে তিন পুরুষ আসামির ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে এবং পরীক্ষার জন্য সিআইডির ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার শিশুটিকে অচেতন অবস্থায় মাগুরা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শুক্রবার রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয় এবং শনিবার সন্ধ্যায় সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়। শিশুটির চিকিৎসার জন্য আট বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের একটি মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে।
মাগুরার এ ঘটনায় দেশজুড়ে ব্যাপক নিন্দা ও প্রতিবাদ চলছে। ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্দোলন তীব্র হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে শিশু-কিশোরী ও নারীদের ধর্ষণ ও ধর্ষণচেষ্টার আরও কয়েকটি ঘটনা সামনে এসেছে।