কক্সবাজার প্রতিনিধি: কক্সবাজারের টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় কাজ করছে কয়েকটি সংস্থা। এর মধ্যে ইউএনডিপি ও কোডেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। সামুদ্রিক কাছিম সংরক্ষণের লক্ষ্যে ১০৯টি মা কাছিমের কাছ থেকে ১৩,১২৩টি ডিম সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১,৫৭৬টি কাছিমের বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে এবং বাকি সাড়ে ১১ হাজারের বেশি বাচ্চা ফুটিয়ে অবমুক্ত করার কাজ চলছে।
সেন্টমার্টিনকে সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য নিরাপদ প্রজনন ও আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইউএনডিপি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। একইভাবে টেকনাফে কোডেকের নেচার অ্যান্ড লাইফ প্রকল্পের অধীনে পাঁচটি হ্যাচারি স্থাপন করা হয়েছে, যেখানে সংরক্ষিত ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে সমুদ্রে অবমুক্ত করা হয়।
গত দুই দিনে ৫৮৭টি কাছিমের বাচ্চা সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে সেন্টমার্টিনে ৫৪৪টি কাছিমের বাচ্চা অবমুক্ত করেছে ইউএনডিপি।
টেকনাফের ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন জানিয়েছেন, শনিবার বিকেলে সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর সৈকতের ডিমাস প্যারাডাইস পয়েন্টে এই বাচ্চাগুলো অবমুক্ত করা হয়। ইউএনডিপি এবং পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় ‘আমার সেন্টমার্টিন’ সামাজিক সংগঠন এই কার্যক্রমে অংশ নেয়।
২০২৪ সালের ১ নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ৩ মার্চ পর্যন্ত ২৬টি মা-কাছিম থেকে ৩,১৮৪টি ডিম সংগ্রহ করা হয়। এর মধ্যে ১,২৪৬টি কাছিমের বাচ্চা ইতোমধ্যে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে।
এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে আয়োজিত অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন বলেন,
“সেন্টমার্টিনকে সামুদ্রিক প্রাণীদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে গড়ে তোলার কাজ চলছে। পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে জীববৈচিত্র্য রক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহ্উদ্দিন, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল-মারুফ, টেকনাফের ইউএনও শেখ এহসান উদ্দীন ও বিভিন্ন প্রকল্প সমন্বয়করা।
কোডেকের নেচার অ্যান্ড লাইফ প্রকল্পের অধীনে ৮৩টি মা-কাছিমের কাছ থেকে ৯,৯৩৯টি ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৩৩০টি কাছিমের বাচ্চা ইতোমধ্যে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে।
তবে, ২০২৫ সালের জানুয়ারির শেষ দিকে কোডেকের প্রকল্পটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। প্রকল্পের অন্যান্য কার্যক্রম থেমে গেলেও হ্যাচারির কাজ স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে চলমান রয়েছে। প্রকল্প পরিচালক শীতল কুমার নাথ জানিয়েছেন, একটি নতুন দাতা সংস্থার সঙ্গে আলোচনা চলছে যেন প্রকল্পটি পুনরায় চালু করা যায়।
পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এই উদ্যোগ অব্যাহত রাখার জন্য সংশ্লিষ্টরা সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।