Logo

আওয়ামী লীগের পাশাপাশি দলটির নেতা-কর্মীরাও নিষেধাজ্ঞায়

আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পাশাপাশি দলটির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের পাশাপাশি দলটির নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ মে) অন্তর্বর্তী সরকারের এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

গতকাল আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষেধজ্ঞা জারি করে এবং এ সংক্রান্ত একটা প্রজ্ঞাপন দেওয়া হয়। ওই প্রজ্ঞাপনের ব্যাখ্যা দিয়ে আজ বিবৃতি দিয়েছে অন্তবর্তী সরকার।

বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংক্রান্ত সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় ১২ মে প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়। উক্ত আইন ও প্রজ্ঞাপন অনুসারে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগ (এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন) কর্তৃক যেকোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম,অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারণা,মিছিল,সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মী ও সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য হবে।

বিবৃতিতে বলা হয়, তবে উক্ত প্রজ্ঞাপন অন্য কোনো রাজনৈতিক দল বা মুক্তমতের মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে ক্ষুণ্ন করে না। আওয়ামী লীগ, এর কোনো কর্মকাণ্ড, দলটি সম্পর্কে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের যৌক্তিক,গঠনমূলক বা আইনানুগ বিশ্লেষণ বা মতামত প্রদান এই প্রজ্ঞাপন দ্বারা খর্বিত করা হয়নি।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, গত প্রায় ১৫ বছর বিশেষ করে গতবছরের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যূত্থানকালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের বিরুদ্ধে হামলা গুম, খুন,অমানবিক নির্যাতন,সন্ত্রাসী কার্যকলাপ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের সুস্পষ্ট অভিযোগ রয়েছে। উল্লিখিত অপরাধসমূহের অভিযোগে উপরোক্ত সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এবং দেশের ফৌজদারি আদালতে বহুসংখ্যক মামলা বিচারাধীন রয়েছে।

এসকল মামলার বিচারে প্রতিবন্ধকতা তৈরি,জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি এবং জননিরাপত্তা বিপন্ন করার লক্ষ্যে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ এবং সংগঠনগুলো কর্তৃক গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার বিরুদ্ধে হামলা ও উসকানি প্রদানসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত করা হচ্ছে।

বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, এতে বিশেষ করে দায়েরকৃত মামলার বাদী ও সাক্ষীদের মনে ভীতির সঞ্চার হয়েছে ও এভাবে বিচার এবং দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে গতকালের প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।

ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। এরপর একে একে তাঁর ও দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অনেক মামলা হয়। গ্রেপ্তার হন অনেক নেতা–কর্মী।

শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকেই এ আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ নানা পক্ষ থেকে দাবি ওঠে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের নেতৃত্বে আসা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও আরও কিছু দলের দাবির পরিপেক্ষিতে অবশেষে নিষিদ্ধ করা হয় আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম। একই সঙ্গে দলটির নিবন্ধনও স্থগিত করেছে নির্বাচন কমিশন।

বাংলাফ্লো/এসএস

Leave a Comment

Comments 0