Logo

পটুয়াখালীতে ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল: ভিপি নূরের বিরুদ্ধে স্লোগান

সরকারি সম্পত্তি রক্ষার্থে দশমিনা ও গলাচিপা পৌরসভা এলাকায় শুক্রবার থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলা প্রশাসন।

ফাইল ছবি

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

দশমিনা: পটুয়াখালীর দশমিনায় উপজেলা প্রশাসনের ৪৮ ঘণ্টার জন্য জারি করা ১৪৪ ধারা ভেঙ্গে বিক্ষোভ মিছিল করেছে দশমিনা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদল ও উপজেলা ছাত্রদল।

গণ অধিকার পরিষদ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ অফিস ভাংচুর ও ভিপি নুর অবরুদ্ধ থাকার ঘটনায় পটুয়াখালীতে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকেলে গলাচিপা শহরে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচী আহবান করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ৪৮ ঘণ্টার জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।

আজ দুপুরে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদল ও উপজেলা ছাত্রদল ১৪৪ ধারা উপেক্ষা করে উপজেলার নলখলা বাজার এলাকায় উপজেলা বিএনপি এবং এর অঙ্গ সংগঠন বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি পালন করে।

বিক্ষোভ মিছিলে তারা গনঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূরকে উপজেলায় অবাঞ্চিত ঘোষণা করে তার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।

স্লোগানে তাদের বলতে শোনা যায়,

\হই হই রই রই, নূরা পাগলা গেলি কই?

ভিপি নুরের দুই গালে, জু\তা মারো তালে তালে\

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাত ৮ টার দিকে জেলার গলাচিপা উপজেলার চরবিশ্বাস বাজারে বিএনপি ও গনঅধিকার পরিষদ সমর্থকদের মধ্যে ঘটা সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এসময় উভয় দলের অফিস ভাংচুর করা হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে।

এছাড়া রাত ১০টার দিকে গলাচিপার বকুল বাড়িয়া ইউনিয়নে একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে ফেরার পথে গনঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুরসহ শতাধিক নেতাকর্মীদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা অবরুদ্ধ থাকার পর প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের উদ্ধার করেন।

এই সংঘর্ষের পেছনে চর বিশ্বাস বাজারে দোকান বরাদ্দ (চান্দিনা ভিটি) নিয়ে দীর্ঘদিনের অসন্তোষ এবং জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পটুয়াখালী-৩ (গলাচিপা-দশমিনা) আসনের সম্ভব্য প্রার্থী গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ভিপি নুর এবং বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুনের সমর্থকদের দ্বন্দ্বই দায়ী বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

গত ১১ জুন দুপুরে গলাচিপা অফিসার্স ক্লাব মিলনায়তনে ছাত্র অধিকার পরিষদ গলাচিপা উপজেলা শাখার নব নির্বাচিত কমিটির পরিচিতি সভায় ভিপি নূর বিএনপি এবং কেন্দ্রীয় নেতা হাসান মামুন সম্পর্কে বিষোদগার করায় তার সমর্থকরা ক্ষিপ্ত হন। এলাকায় ভিপি নুরের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেন তারা। এর ফলে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় বলেও মনে করছেন অনেকে।

ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নুরুল হক নুর লিখেছেন, ‘এলাকার সন্তান হিসেবে মানুষের ভালোবাসা থাকায় আওয়ামী লীগের লোকেরাও আমাদের সঙ্গে ঝামেলা করতে সাহস পায়নি। বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী হাসান মামুনের নির্দেশে চরিত্রহীন, লম্পট বাকের বিশ্বাসের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে!’

অন্যদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হাসান মামুন তার ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, ‘চরবিশ্বাস ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতাদের নেতৃত্বে গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা বিএনপি কার্যালয়ে হামলা চালায়। এতে বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ অনেকে আহত হন।’

ঘটনার বিষয়ে গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশাদুর রহমান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

গলাচিপা-দশমিনার বিভিন্ন স্থানে গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা ও অফিস ভাংচুর, হামলার প্রতিবাদে বিকাল ৩টা ৩০মিনিটে গলাচিপা উপজেলা গণঅধিকার পরিষদের সংবাদ সম্মেলন ও ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচী পালনের কথা জানিয়েছে গনঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য মো. রবিউল।

এদিকে গলাচিপা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব সত্তার হাওলাদার বলেন বিএনপি নেতাকর্মীর উপর হামলা ও অফিস ভাংচুরের প্রতিবাদে শুক্রবার বিকাল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

গলাচিপা উপজেলাধীন চরবিশ্বাস ও বকুলবাড়িয়া ইউনিয়নের সংঘটিত সাম্প্রতিক সংঘর্ষ ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও গণঅধিকার পরিষদ এর মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।

উভয় পক্ষের যুগপৎ কর্মসূচীর ঘোষণার প্রেক্ষিতে আইন-শৃঙ্খলার মারাত্মক অবনতিসহ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সমূহ সম্ভাবনা থাকায় জনগণের জানমাল এবং সরকারি সম্পত্তি রক্ষার্থে দশমিনা ও গলাচিপা পৌরসভা এলাকায় শুক্রবার থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলা প্রশাসন।

উল্লেখিত সময়ে গলাচিপা ও দশমিনা উপজেলায় সকল প্রকার সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল, গণজামায়েত, বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও সকল প্রকার দেশীয় অস্ত্র ইত্যাদি বহনসহ সংশ্লিষ্ট এলাকায় ৫ বা ততোধিক ব্যক্তির অবস্থান কিংবা চলাফেরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হলেও সেই নিষেধাজ্ঞা মানেননি বিএনপি নেতাকর্মীরা।

বাংলাফ্লো/আফি  

Leave a Comment

Comments 0