জেলা প্রতিনিধি
বরগুনা: তালতলী উপজেলা বিএনপির দুই গ্রুপের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৪ জন আহত হয়েছেন। উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শহিদুল হকেও সমর্থক এবং উপজেলা বিএনপির যুগ্ম-আহ্বায়ক ও তালতলী বাজার বহুমুখী সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুল আলম মামুন ও উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মিয়া রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজ সমর্থকদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তালতলী উপজেলার সদর রোড এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন নৌবাহিনীর সদস্যরা।
এ ঘটনায় উভয় পক্ষের মধ্যে আহতরা হলেন—সিদ্দিকুর রহমান (৩০), শাকিল (২৭), রবিউল মুসুল্লি (২৬), মহসিন খান (২৭), মানু (৪৫), আলাউদ্দিন (৪৫), কবির (৩৫), রহিম (৪০), রুবেল (৩৪), সাহাবিদ খান (৪২), আ. হাই (৫০), সাইদুল (৩৫), নুর মোহাম্মদ (৪৫) এবং মিজান (২৫)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত সোমবার উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শহিদুল হকের বিরুদ্ধে এক ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপিকর্মী ও ব্যবসায়ী মো. আবুল কালাম। এ সময় তার পক্ষে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ও তালতলী বাজার বহুমুখী সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুল আলম মামুন, যুগ্ম আহ্বায়ক মিয়া শামিম হাসান, মংসেলন তালুকদার, যুবদলের সদস্য সচিব রিয়াজুল ইসলাম, শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান, কৃষক দলের জেলা সহসভাপতি হারুন অর রশিদ, উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি জাফরসহ আরও কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
পরে ওই সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শহিদুল হকের সমর্থকরা শহরের সদর রোড এলাকায় একটি মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা কর্মসূচি পালন করেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম মামুন ও যুবদলের সদস্য সচিব মিয়া রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজের নেতৃত্বে একই স্থানে পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ কর্মসূচি শুরু করলে দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) উপস্থিতিতে ঘণ্টাব্যাপী চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন নৌবাহিনীর সদস্যরা। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১৪ জন নেতাকর্মী আহত হন।
উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও তালতলী বাজার বহুমুখী সাধারণ ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মাহবুবুল আলম মামুন বলেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শহিদুল হক ব্যবসায়ীদের কাছে চাঁদা দাবি ও একজন ব্যবসায়ীকে মারধরের অভিযোগে ব্যবসায়ীদের পক্ষে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। আমরা উপজেলা বিএনপির ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা ওই ব্যবসায়ীদের পক্ষে একাত্মতা প্রকাশ করে উপস্থিত ছিলাম। তবে এ কর্মসূচিতে তারা হামলা চালান। এতে বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও আমাদের বিএনপির নেতাকর্মীরা আহত হন। এঘটনায় শহিদুলের বিষয়ে সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা না নিলে কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলেও জানান তিনি।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. শহিদুল হক বলেন, আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন চলছিল। এ সময় উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মাহবুবুল আলম মামুন ও যুবদলের সদস্য সচিব মিয়া রিয়াজুল ইসলাম রিয়াজের নেতৃত্বে উপস্থিত আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালানো হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়ে নৌবাহিনীর সহায়তায় প্রায় এক ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়। বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ছাড়া পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শহরের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দুই ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হয়েছিল।
বাংলাফ্লো/এসকে
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
Comments 0