Logo

‘আগে হলে-মেসে থাকা উপদেষ্টারা এখন চড়েন ৬ কোটির গাড়িতে, পরেন ৪০ লাখের ঘড়ি’

দ্রুততম সময়ে নির্বাচন দিতে উপদেষ্টাদের অনেকেই রাজি নন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু।

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু

জেলা প্রতিনিধি

নোয়াখালী: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকতউল্লা বুলু বলেছেন, সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার মলিন চেহারা এখন রসালো হয়ে গেছে। তারা আগে হলে-মেসে থাকলেও এখন চড়েন ৬ কোটি টাকার গাড়িতে। গায়ে দেন ৩০ হাজার টাকার পাঞ্জাবি আর হাতে পরেন ৪০ লাখ টাকার ঘড়ি। তাদের তদবিরে প্রশাসন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।

বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) বিকেলে নোয়াখালীর চৌমুহনীতে জুলাই-আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে নিহত উপজেলার সাত শহীদ পরিবারের মাঝে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেওয়া ঈদ উপহার বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

বরকতউল্লা বুলু বলেন, নতুন দলের (এনসিপি) এক নেতা বাড়ি যেতে এক শর অধিক গাড়িবহর নিয়ে গেছেন। ইন্টারকন্টিনেন্টালে ৫ কোটি টাকার ইফতার খাওয়ান। আগে ৫০০ টাকার পাঞ্জাবি পরলেও এখন পরেন ৩০ হাজার টাকার পাঞ্জাবি। জুতা পরেন ৫০ হাজার টাকার। ব্যবসায়ী-প্রশাসন তাদের তদবির আর বদলি বাণিজ্যে অতিষ্ঠ। মব জাস্টিজের নামে মানুষের ঘরবাড়িতে হামলা-নৈরাজ্য করা হচ্ছে। এর থেকে মুক্তি পেতে হলে দেশে নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, যারা দেশে দ্বিতীয় রিপাবলিকের কথা বলে তারা জনগণের পক্ষে রাজনীতি করে বলে আমি মনে করি না। যারা ৩০ লাখ শহীদকে অস্বীকার করে, একাত্তর ও মহান মুক্তিযুদ্ধকে মানে না এবং এর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে রাজনীতি করে তারা আসলে দেশ গণতন্ত্র ও জনগণের শত্রু। তাদের ভোট চাওয়া, প্রার্থী হওয়া কিংবা এ দেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই।

তিনি আরও বলেন, সেনাবাহিনী আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের ভ্যানগার্ড, এ বাহিনী একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণ-অভ্যুত্থান এবং চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ৫ আগস্ট সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান যদি হাসিনাকে তার মাতৃভূমি ভারতে পাঠিয়ে না দিতেন তাহলে বাংলাদেশে আরেকটি ভয়াবহ ঘটনা ঘটত।

বরকতউল্লা বুলু বলেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে দুই হাজার নিহত ও আহত হয়েছে ২০ হাজার। এর মধ্যে ৮৬২ শহীদ বিএনপির নেতাকর্মী। সেদিন তারেক রহমানের ঐতিহাসিক নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। বিগত ১৭ বছর তিনি (তারেক রহমান) লন্ডনে থেকে ৫০টির অধিক রাজনৈতিক দলের ঐক্য গড়ে আন্দোলন বেগবান করেন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে আমরা ড. ইউনূসের জন্য দোয়া করি। তিনি যেন দীর্ঘায়ু হন এবং দেশে দ্রুত একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করে বাংলাদেশকে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ করেন।

এ সময় বেগমগঞ্জের জুলাই-আগস্টের শহীদ মো. ফারুক, মো. সজিব, ইফফাত হোসেন, আবদুল মোতালেব মোল্লা, মো. আশিক হোসেন, মো. বেলাল হোসেন ও মো. রুবেলের পরিবারের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়। তারেক রহমান স্বাক্ষরিত শান্তনা চিঠিও প্রত্যেক পরিবারের কাছে পৌঁছানো হয়। পরে শহীদ পরিবারে সঙ্গে মধ্যহ্নভোজে অংশ নেন বিএনপি নেতা বরকত উল্লাহ বুলু।

অনুষ্ঠানে বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি বাবু কামাখ্যা চন্দ্র দাস সভাপতিত্ব করেন।

এতে আরও বক্তব্য রাখেন উপজেলা বিএনপির সদস্য ও বরকত উল্লাহ বুলুর সহধর্মীনি শামীমা বরকত লাকী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাহফুজুল হক আবেদ, চৌমুহনী পৌরসভা বিএনপির সভাপতি জহির উদ্দিন হারুন ও সাধারণ সম্পাদক মহসিন আলমসহ অন্যান্যরা।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0