Logo

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৬ তম জন্মদিন আজ

১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে শেখ মুজিব তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা : আজ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৬ তম জন্মদিন। ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। বাবা শেখ লুৎফুর রহমান ও মা সায়েরা খাতুনের ছয় সন্তানের মধ্যে তিনি ছিলেন তৃতীয়।

রাজনৈতিক জীবনের সূচনা : ১৯৪০ সালে সর্বভারতীয় মুসলিম ছাত্র ফেডারেশনে যোগদানের মাধ্যমে শেখ মুজিব তাঁর রাজনৈতিক জীবন শুরু করেন। ১৯৪৬ সালে তিনি কলকাতা ইসলামিয়া কলেজের (বর্তমান মওলানা আজাদ কলেজ) ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৪৯ সালে আওয়ামী মুসলিম লীগের পূর্ব পাকিস্তান শাখার যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং ১৯৫৩ সালে পার্টির সাধারণ সম্পাদক পদে দায়িত্ব নেন। ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের টিকিটে ইস্ট বেঙ্গল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির সদস্য নির্বাচিত হন। বাঙালির অধিকার আদায়ে আজীবন লড়াই করা এই নেতাকে বহুবার কারাবরণ করতে হয়।

গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতৃত্ব: তিনি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ১৯৫৮ সালের সামরিক শাসনবিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ৬-দফা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানসহ প্রতিটি স্বাধিকার আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাঁর নেতৃত্বে বাঙালি জাতি স্বাধীনতার আন্দোলনের পথে এগিয়ে যায়।

১৯৭০-এর নির্বাচন ও মুক্তিযুদ্ধ : ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পরও তৎকালীন পাকিস্তানের সামরিক জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং দমন-পীড়ন চালায়। বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চ ১৯৭১ সালে ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতার ডাক দেন। এই ভাষণ ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্টারে অন্তর্ভুক্ত হয়ে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে।

১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়। নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের পর বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে।

বঙ্গবন্ধুর অবদান ও হত্যাকাণ্ড : বঙ্গবন্ধু বিশ্ব শান্তি, গণতন্ত্র ও স্বাধীনতার জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করেছেন। এজন্য তিনি বিশ্বশান্তি পরিষদ প্রদত্ত ‘জুলিও কুরি’ পদকে ভূষিত হন। বিবিসির এক জরিপে তিনি সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নির্বাচিত হন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠনের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু যখন উন্নয়নের কার্যক্রম গ্রহণ করছিলেন, তখন পরাজিত শক্তি ও স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট একদল সেনা কর্মকর্তা ধানমন্ডির বাসভবনে তাঁকে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে হত্যা করে।

আজকের এই দিনে, বঙ্গবন্ধুর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতি স্মরণ করছে তাঁর অসামান্য ত্যাগ ও নেতৃত্বের অবদান।