Logo

খালেদা জিয়ার আসার দিনে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণের জন্য যে বার্তা দিল বিএনপি

সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে এই ফ্লাইটটি আসার পরে বা আগে তারা যেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যেটা আছে সেটা যেন ব্যবহার করার চেষ্টা করেন। অর্থাৎ তারা যেন বিমানবন্দর থেকে কাকলী পর্যন্ত এই জায়গাটা এড়িয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করেন। এটা আমাদের অনুরোধ থাকবে।

বিএনপির যৌথ সভা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাফ্লো প্রতিনিধি

ঢাকা: সোমবার (৫ মে) সকালে যুক্তরাজ্যের লন্ডন থেকে চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এদিন বিএনপি নেতাকর্মীদের যানজট সৃষ্টি না করে এক হাতে জাতীয় পতাকা, অন্যহাতে দলীয় পতাকা নিয়ে রাস্তার দুই ধারে সুশৃঙ্খলভাবে দাঁড়িয়ে অভ্যর্থনা জানানোর নির্দেশনা দিয়েছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

একই সঙ্গে দুর্ভোগ এড়ানোর জন্য সাধারণ জনতার জন্যেও দিয়েছেন বার্তা। সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে আসা বিমানের ফ্লাইট বিমানবন্দরে নামার আগে-পরে নিচের সড়ক এড়িয়ে এলিভেডেট এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহারের অনুরোধ করেছেন বিএনপি মহাসচিব।

শনিবার (৩ মে) সন্ধ্যায় গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরা নিয়ে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে গুলশানে যৌথ সভা শেষে এই অনুরোধ জানান মির্জা ফখরুল।

তিনি বলেন, আমরা আশা করছি ৫ মে বেগম খালেদা জিয়া একটি বিশেষ বিমানে অর্থাৎ তিনি যে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে গিয়েছিলেন সেটাতে দেশে ফিরবেন। সময়টা অনেক কিছুর ওপর নির্ভর করছে। আমরা যখন নিশ্চিত হবো তখন গণমাধ্যমের মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দেব। আমরা আগে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত ছিলাম না।

তিনি আরও বলেন, চেয়ারপারসনের দেশে ফেরার বিষয় নিয়ে আমরা যৌথসভা করেছি। যাতে শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে জনগণ তাকে অভ্যর্থনা জানাতে পারেন সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

মির্জা ফখরুল বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আমাদের আবেদন থাকবে অত্যন্ত শৃঙ্খলার সঙ্গে রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে কোনো যানজট সৃষ্টি না করে তারা তাদের নেত্রীকে অভ্যর্থনা জানাবে। এক হাতে জাতীয় পতাকা-অন্যহাতে দলীয় পতাকা দিয়ে তাকে অভ্যর্থনা জানাবো। এটা হচ্ছে দলীয় সিদ্ধান্ত। আমাদের নেতৃবৃন্দ দায়িত্ব নিয়েছেন তারা শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে এই অভ্যর্থনা যেন জানাতে পারি সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করবেন।

সাধারণ নাগরিকদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, জনগণের কাছে আমাদের আহ্বান থাকবে এই ফ্লাইটটি আসার পরে বা আগে তারা যেন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যেটা আছে সেটা যেন ব্যবহার করার চেষ্টা করেন। অর্থাৎ তারা যেন বিমানবন্দর থেকে কাকলী পর্যন্ত এই জায়গাটা এড়িয়ে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ব্যবহার করেন। এটা আমাদের অনুরোধ থাকবে। আমরা আশা করি জনগণ আমাদের সহযোগিতা করবেন।

তিনি বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের বলবো যেইভাবে আলোচনা করেছি সেইভাবে যেন সবাই কাজ করি। শৃঙ্খলা নিশ্চিত করি।

গণমাধ্যমকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বিশেষ করে সাংবাদিকদের বলবো, আপনারা সবসময় সহযোগিতা করেন। কিন্তু আপনারা যে গাড়ি নিয়ে সামনে গিয়ে কভার করার চেষ্টা করেন তাতে করে হয় কি আমাদের লোকজন ম্যাডামের গাড়ির সামনে চলে আসে। এটা একটা বড় সমস্যা। তাই বারবার করে বলার চেষ্টা করছি। উনি আসবেন প্রায় ৭ -৮ ঘণ্টা জার্নি করে। এরপর যদি বাসায় ফিরতেই চার-পাঁচ ঘণ্টা লাগে তাহলে তো এমনিতেই অসুস্থ হয়ে পড়বেন। তাই বিমানবন্দর থেকে দ্রুত যাতে তিনি বাসায় ফিরতে পারেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি জানান, চিকিৎসা শেষে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বাংলাদশ বিমানে নয়, কাতারের আমিরের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে দেশে ফিরবেন। তবে কখন বাংলাদেশে নামবেন তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয় নিয়ে ফখরুল বলেন, চার মাস লন্ডনে চিকিৎসা শেষে তিনি ভালো পরিবেশ, একইসঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্য দিয়ে উন্নত চিকিৎসার কারণে অনেকটা ভালোবোধ করছেন। যে কারণে চেয়ারপারসন দেশে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, এশিয়ার মধ্যে যেসব নারী নেত্রী বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছেন, কারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন তার মধ্যে বেগম খালেদা জিয়া অন্যতম। তিনি কখনো অন্যায়ের কাছে বিশেষ করে ফ্যাসিবাদের কাছে মাথানত করেননি। আপনারা জানেন, ১৯৯১সালে স্বাধীনতার যুদ্ধের সময় বেগম খালেদা জিয়া তার স্বামী আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান যখন স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন তখন তিনি দুই শিশু সন্তানের হাত ধরে ঢাকায় চলে এসেছিলেন।

প্রসঙ্গত, উন্নত চিকিৎসার জন্য গত ৮ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে যান বেগম খালেদা জিয়া। টানা ১৭ দিন দ্য লন্ডন ক্লিনিকে চিকিৎসা শেষে ২৫ ফেব্রুয়ারি লন্ডনে বড় ছেলে তারেক রহমানের বাসায় থেকে চিকিৎসা নেন।

তবে খালেদা জিয়ার লন্ডন যাত্রার দিনে নেতাকর্মীদের ঢলে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়েন উত্তরের দিকের মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে পড়ে থাকতে হয় সাধারণ মানুষকে। এমনকি নির্ধারিত সময়ে উড়তে পারেনি খালেদা জিয়াকে বহন করা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স।

বাংলাফ্লো/এসবি

Leave a Comment

Comments 0