বাংলাফ্লো জেলা প্রতিনিধি
শরীয়তপুর: শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান ছয় দিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত।
জানা যায় মাসুদ জুলাই আন্দোলনের সময় ঢাকার আশুলিয়ায় ছয়জনের লাশ পোড়ানোর মামলায় আসামি। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি ২৪ এপ্রিল থেকে থানায় অনুপস্থিত আছেন বলে ধারণা সহকর্মীদের।
গত সোমবার মামলাটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের কার্যতালিকার ২ নম্বরে ছিল। ওই দিন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের ধার্য দিন ছিল। তবে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছানো হয়েছে।
শরীয়তপুরের পুলিশ সুপারের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গোসাইরহাট সার্কেল) তানভির হোসেন বাংলাফ্লোকে বলেন, মাসুদুর রহমান কোথায় আছেন, তা আমরা জানি না। তিনি জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী কর্মস্থলে ছয়দিন ধরে অনুপস্থিত আছেন। এবং তিনি কোনো মামলার আসামি কি না, তা-ও বলতে পারছি না। এছাড়া পুলিশ হেডকোয়ার্টার হতে বা কোনো আদালত হতে এ-সংক্রান্ত কোনো নথিপত্র আমাদের কাছে আসেনি।’
মামলার এজাহার ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আন্দোলনের সময় আশুলিয়ায় গুলিবিদ্ধ হয়ে ছয়জন নিহত হন। আশুলিয়া থানার সামনেই পুলিশ ভ্যানে নিহত ব্যক্তিদের লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় শহীদ সাজ্জাদ হোসেন সজলের মা শাহীনা বেগম বাদী হয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা করেন। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৪০ জনকে আসামি করা হয়। মামলার ২৭ নম্বর আসামি মাসুদুর রহমান। তিনি তখন সাভারের আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এরপর মাসুদুর রহমানকে শরীয়তপুর জেলা পুলিশে বদলি করা হয়। তিনি গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর জেলা পুলিশে যোগদান করেন। তারপর শরীয়তপুরের পুলিশ সুপার তাঁকে ১২ ডিসেম্বর সদরের পালং মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) হিসেবে পদায়ন করেন।
২৪ এপ্রিল থেকে মাসুদুর রহমান পালং মডেল থানায় আসছেন না। তিনি ছুটি নিয়েও কর্মস্থল ত্যাগ করেননি। মঙ্গলবার পালং মডেল থানায় গিয়ে তাঁর কক্ষটি তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। তাঁর ব্যবহৃত সরকারি মুঠোফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। তাঁর ব্যক্তিগত নম্বরে ফোন করলে সেটিও বন্ধ পাওয়া যায়।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিন বাংলাফ্লোকে বলেন, ২৪ এপ্রিল থেকে পরিদর্শক মাসুদুর রহমান থানায় অনুপস্থিত। সন্ধ্যার পর আমি থানায় এসে তাকে পাইনি। তার কাছে জরুরি ফোন এসেছে, তার মা অসুস্থ, ঢাকায় যেতে হবে, অন্য সহকর্মীদের কাছে এমন বলে তিনি থানা থেকে বেরিয়ে চলে গেছেন। তিনি কোথায় আছেন, তা আমরা জানি না। বিষয়টি পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে।
বাংলাফ্লো/এসএস
Comments 0