ডেস্ক রিপোর্ট : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার ধজনগর গ্রামে স্ত্রী জ্যোতি আক্তার (২০) ও শ্যালিকা স্মৃতি আক্তারকে (১৩) হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া স্বামী আমীর হোসেন বুধবার (৫ মার্চ) আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। আমীর তার স্ত্রীর পরকীয়ার সন্দেহকে এই হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আমীর হোসেন জানান, তিনি দীর্ঘদিন ধরে সন্দেহ করতেন যে তার স্ত্রী জ্যোতি আক্তার পরকীয়া করছেন। গত এক সপ্তাহ আগে তিনি শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে স্ত্রীকে অন্য এক যুবকের সঙ্গে বেডরুমে দেখেন। এ ঘটনায় জ্যোতি তার কাছে ক্ষমা চাইলেও আমীরের সন্দেহ দূর হয়নি।
রোববার (২ মার্চ) গভীর রাতে আমীর হোসেন স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কথা বললে জ্যোতি আপত্তি জানান। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে তীব্র ঝগড়া হয়। ঝগড়ার এক পর্যায়ে আমীর বালিশ দিয়ে স্ত্রীকে শ্বাসরোধ করে হত্যার চেষ্টা করেন। এ সময় শ্যালিকা স্মৃতি আক্তার ঘটনাটি দেখে ফেলেন। আমীর তাকে ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে বললে স্মৃতি চলে যান। এরপর আমীর আবারও বালিশ চেপে স্ত্রী জ্যোতিকে হত্যা করেন।
পরে আমীর শ্যালিকা স্মৃতিকে রান্নাঘরে ডেকে নিয়ে গলায় চাপ দিয়ে তাকেও হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ড শেষে তিনি নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার নিয়ে পালিয়ে যান।
সোমবার (৩ মার্চ) ভোরে ঘটনাটি প্রকাশ পেলে নিহতদের ভাই মোবারক হোসেন কসবা থানায় হত্যার মামলা দায়ের করেন। মামলার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করে এবং মঙ্গলবার (৪ মার্চ) চট্টগ্রামের বাকুলিয়া এলাকা থেকে আমীর হোসেনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে এক জোড়া স্বর্ণের কানের দুল, চেইন, নূপুর ও ৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
কসবা থানার তদন্ত কর্মকর্তা রিপন দাস জানান, আদালতে আমীর হোসেন ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেছেন। তিনি পুলিশের কাছেও ১৬১ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
আমীর হোসেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার জামতলী গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে। এই মর্মান্তিক ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।