Logo

অর্থসংকটে রোহিঙ্গা শিশুদের পড়ালেখা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে: হিউম্যান রাইটস ওয়াচ

শিক্ষা-সংকটের ফলে শিশুদের ওপর সশস্ত্র গোষ্ঠী ও অপরাধ চক্রের প্রভাবও বেড়েছে। অপহরণ, মানবপাচার এবং জোরপূর্বক দলে টেনে নেওয়ার মতো ঘটনা বাড়ছে। ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে ৫১টি শিশু অপহরণের তথ্য রেকর্ড করা হয়েছে।

ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ঢাকা: বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিশু শিক্ষার পরিস্থিতি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ।  

বুধবার (২৬ জুন) সংস্থাটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, উদ্ভূত পরিস্থিতির নেপথ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য বৈশ্বিক দাতার অনুদান হ্রাস পাওয়া।

অর্থসংকটের কারণে চলতি মাসের তিন তারিখ রোহিঙ্গা শিবিরে এনজিও পরিচালিত অসংখ্য ‘লার্নিং সেন্টার’ বন্ধ করে দেয় ইউনিসেফ। শিবিরের চার লাখ ৩৭ হাজার শিশুর শিক্ষার জন্য এখন কেবল যে প্রতিষ্ঠানগুলো চালু রয়েছে, তা বাইরের সমর্থন ছাড়া রোহিঙ্গারা নিজেরাই প্রতিষ্ঠা করেছে।

২০২৪ সালে যুক্তরাষ্ট্র ৩০ কোটি ডলার অনুদান দিলেও চলতি বছর জুন নাগাদ তা এক কোটি ২০ লাখ ডলারে নেমে আসে। এপ্রিলে শিক্ষাখাতে প্রয়োজনীয় সাত কোটি ২০ লাখ ডলারের মধ্যে মাত্র দুই কোটি ২০ লাখ ডলার অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। এর ফলে তিন লাখের বেশি শিক্ষার্থীর জন্য চালু থাকা লার্নিং সেন্টার বন্ধ হয়ে যায়।

ইউনিসেফ ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ঊর্ধ্বতন শ্রেণির পাঠ কার্যক্রম ২৯ জুন থেকে পুনরায় চালুর পরিকল্পনা করলেও, বাকি ক্লাসের জন্য আলাদা অর্থের উৎস না পাওয়া গেলে সেগুলো স্থগিতই থাকছে।

কমিউনিটি-নেতৃত্বাধীন স্কুলগুলোতে উন্নত মানের পাঠদান, বিষয়ভিত্তিক ও অভিজ্ঞ শিক্ষকের উপস্থিতি থাকলেও সেগুলোর কোনও সরকারি স্বীকৃতি নেই। ফলে সেগুলোর ওপর দাতারা বিনিয়োগও করেন না।

এই স্কুলগুলোতে মাসিক ফি দিতে হয়, যা অনেক পরিবারই বহন করতে পারে না। অনেক সময় শিশুদের স্কুল থেকে তুলে কাজে পাঠানোর ঘটনাও ঘটে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষা-সংকটের ফলে শিশুদের ওপর সশস্ত্র গোষ্ঠী ও অপরাধ চক্রের প্রভাবও বেড়েছে। অপহরণ, মানবপাচার এবং জোরপূর্বক দলে টেনে নেওয়ার মতো ঘটনা বাড়ছে। ২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে ৫১টি শিশু অপহরণের তথ্য রেকর্ড করা হয়েছে।

হিউম্যান রাইটস ওয়াচের শিশু অধিকার বিষয়ক পরিচালক বিল ভ্যান এসভেলড বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অনুদান দিয়ে আসা অন্যান্য দেশ রোহিঙ্গা শিশুদের পড়াশোনার বিষয়টি যেন ভুলে যাচ্ছে। অথচ পুরো এক প্রজন্ম শিশু ঝড়ে পড়া ঠেকাতে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের পাশে বৈশ্বিক দাতাদের থাকা উচিত। আর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত সবার শিক্ষার অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট হওয়া।

শরণার্থী শিবিরের বাইরের স্কুলে রোহিঙ্গা শিশুদের পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে মনে করছে প্রতিবেদকরা।

বাংলাফ্লো/আফি

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0