Logo

আগামী ৪৮ ঘন্টায় পাল্টে যেতে পারে মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাস!

যুদ্ধের এই আগুন দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়বে নাকি কুটনীতির মাধ্যমে সুরাহা হবে তা নির্ভর করবে ইরানের পরবর্তী সামরিক সিদ্ধান্তে।

ফাইল ছবি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ঢাকা: ২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের আগ্রাসনের পর থেকেই উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য। ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনে গাজায় এপর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৬ হাজার মানুষ।

ইসরায়েল গাজার পাশাপাশি বিচ্ছিন্ন আক্রমন চালিয়েছে লেবানন, ইয়েমেন ও মিশরেও। সবশেষ জুনের মাঝামাঝিতে ইরানে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। যা মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনাকে তুঙ্গে নিয়ে যায়। প্রথমে ইরানে বিমান ও ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েল এর জবাবে ইরান আধুনিক সব ব্যালিস্টিক মিসাইল ও ড্রোন ছুড়তে থাকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে।

এই অবস্থায় ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ইরানের পারনমানবিক স্থাপনাকে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি আখ্যা দিয়ে বন্ধুরাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ কামনা করে। তবে জাতিসংঘ ও ইউরোপিয়ান দেশগুলো সামরিক হস্তক্ষেপের পরিবর্তে কূটনীতির টেবিলে বসে সংঘাত প্রশমনের পরামর্শ দেয়। এ নিয়ে গত শুক্রবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের বিশেষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা ভয়াবহতা বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রকে সরাসরি সামরিক পদক্ষেপ না নেয়ার আহ্বান জানিয়ে আসছিলো। সকল জল্পনা-কল্পনা অবসান ঘটিয়ে গতরাতে ইরানের সামরিক ও পারমানবিক স্থাপনায় সরাসরি আঘাত করে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিমান। ডোনাল্ড ট্রাম্প এক কনফারেন্সে বলেন ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহানে সামরিক হামলা চালিয়ে এই তিনটি পারমানবিক স্থাপনা ধ্বংস করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

কোডনেম “Operation Midnight Hammer”–এর আওতায় যুক্তরাষ্ট্র ৭টি B‑2 স্টিলথ বোমবার ও প্লুতোনিয়াম-প্রযুক্তির মিসাইলে Fordow, Natanz, Isfahan চিহ্নিত স্থাপনাগুলো আক্রমণ করে। ১৪টি ৩০,০০০ পাউন্ড বাঙ্কার-বাস্টার এবং সাবমেরিন থেকে ২০এর অধিক Tomahawk মিসাইল নিক্ষেপ করা হয়, যেগুলো পূর্বপরিকল্পিত গোপনে লক্ষ্যভুক্ত এলাকায় পৌঁছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রকাশ্য বক্তব্যে দাবি করেন, এই হামলায় “নিউক্লিয়ার স্থাপনা সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস” হয়েছে; তিনি বলেন, “এখনই শান্তির সময়” ।

যুক্তরাষ্ট্রের হামলার জবাবে ফুঁসে উঠেছে তেহরান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি এই হামলাকে সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী আখ্যা দিয়ে এর প্রভাব হবে ভয়াবহ বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন।আরাঘচি এটিকে “নির্দয়”, “আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন” বলেছে এবং সতর্ক করে দিয়েছে—“চিরস্থায়ী প্রভাব” থাকতে পারে; IRGC ঘোষণা করে, “প্রতিশোধ সীমাবদ্ধ থাকবে না” বলেও হুমকি দিয়েছেন।

মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি বিবেচনায় বিশ্লেষকরা বলছেন মধ্যপ্রাচ্যের আগামী ৪৮ ঘন্টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যুদ্ধের এই আগুন দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়বে নাকি কুটনীতির মাধ্যমে সুরাহা হবে তা নির্ভর করবে ইরানের পরবর্তী সামরিক সিদ্ধান্তে। বেশ বিছু পদক্ষেপ যা ইরান গ্রহন করতে পারে তাও বলছেন বিশেষজ্ঞরা।

ইরানের বড় হামলার সম্ভাবনা দেখছেন অনেকেই তারা বলছেন ইসরায়েল বা মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র/ড্রোন দ্বারা বড় হামলা বা ইয়েমেনের হুথি গোষ্ঠী দ্বারা প্রোক্সি হামলা করতে পারে ইরান।

সিরিয়া, ইরাক, ইয়েমেন–ভিত্তিক গোষ্ঠীর ভূমিকা বাড়তে পারে। যা আঞ্চলিক ভাবে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ঘাঁটি ও নৌযানকে লক্ষ্যবস্তু করতে পারে।

জাতিসংঘ, ইউরপিয়ান ইউনিয়নের সাথে চীন ও রাশিয়া এখন পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আলোচনায় উৎসাহী। কিন্তু যদি ইরানের এই দুই মিত্র রাষ্ট্রকে কাছে টানতে পারে ইরান তবে বড় পরিসরের যুদ্ধ দেখতে পারে বিশ্ব।

বড় কোনো হামলা না হলে, এটি হতে পারে কূটনৈতিক বিজয় অথবা মধ্যপ্রাচ্যে ইতিহাস নতুন করে লিখতে হবে।

বাংলাফ্লো/আফি

Post Reaction

👍

Like

👎

Dislike

😍

Love

😡

Angry

😭

Sad

😂

Funny

😱

Wow

Leave a Comment

Comments 0